বাসস্থান মানুষের মৌলিক চাহিদা। বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় আজকাল অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসমৃদ্ধ বাসভবন নির্মাণে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার লক্ষণীয় মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজ ঘরে অবস্থান করে দূরবর্তী দেশের আত্মীয়- স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সামনাসামনি কথোপকথন থেকে আরম্ভ করে রিমোট কন্ট্রোলিং পদ্ধতিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, কক্ষের তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধি করা, লাইটিং সিস্টেম, ঘরে বসেই বাজার করা, চিকিৎসা সেবা গ্রহণ, চিত্তবিনোদন ইত্যাদি সবকিছুতেই আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবন- যাপন অত্যন্ত আরামদায়ক ও সহজসাধ্য করে দিয়েছে।
এ ধরনের সুবিধাসমৃদ্ধ বাসস্থানকে স্মার্ট হোম (Smart Home) এবং এর পদ্ধতিকে হোম অটোমেশন সিস্টেম (Home automation system) বলা হয়। এসব বাসস্থানে দৈনন্দিন সব ধরনের কাজে নানা ধরনের ডিভাইস যেমন— টেলিভিশন, সাউন্ড ব্যবস্থা, মিউজিক সিস্টেম, লাইট, ফ্যান, এয়ারকন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটর, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ফায়ার সিস্টেম, শাওয়ার সিস্টেম, পর্দা উঠানো- নামানো, গ্যারেজ সিস্টেম, ভূমিকম্প সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, তাপ নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাও অন্তর্ভুক্ত থাকে। স্মার্ট হোম হলো একধরনের ওয়ান-স্টপ সার্ভিস পয়েন্টের মতো, যেখানে বসবাসের জন্য সব উপযোজন পাওয়া যায় এবং গ্রাহককে ব্যবহার্য দ্রব্যাদির গুণগতমান নিশ্চিত করে এ সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা যায়।
স্মার্ট হোম ক্যামেরা এবং মোশন সেন্সর (Motion Censor) দিয়ে পুলিশ কন্ট্রোল রুম কিংবা প্রাইভেট সিকিউরিটি কোম্পানির সাথে যুক্ত থাকে বলে বাসস্থানটি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকে এবং বাসস্থানের নিরাপত্তা সুরক্ষিত হয়। বাসস্থানে কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি থাকলে স্মার্ট হোম তার জন্য সত্যিকারের সহায়তা হতে পারে, কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে (ভয়েস কমান্ড) দরজা খোলা বা বন্ধ করা, লাইট, কম্পিউটার ও টেলিফোন চালু কিংবা বন্ধ করা ইত্যাদি কাজ তখন সহজেই করা সম্ভব হয়ে যায়।
হোম অটোমেশনে ব্যাপক আর্থিক বিনিয়োগ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবল, ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ, কণ্ঠস্বর বা ভয়েস নিয়ন্ত্রিত ডিভাইস ব্যবহারে বিড়ম্বনা ইত্যাদি সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।